ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত ? পিচের বৈশিষ্ট্য এবং ক্রিকেটের সকল অজানা বিষয়

শরীর চর্চার পাশাপাশি মনকে আনন্দ দেওয়ার জন্য খেলাধুলার বিকল্প কিছু নেই। সারাদিনের সমস্ত কাজকর্মের শেষে অবসর সময়ে আমরা বিনোদনের জন্য খেলাধুলা দেখে দেখি। শুধুমাত্র বিনোদন ই নয়, নিজের দেশকে রিপ্রেজেন্ট এবং দেশের নাম এক দেশ থেকে আরেক দেশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে খেলোয়াড়দের সমর্থন ও করে থাকি। আজকের আলোচনার বিষয় হলো; ক্রিকেটপ্রাচীন একটি জনপ্রিয় খেলা হলো ক্রিকেট। বর্তমানে এক তৃতীয়াংশ মানুষ ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে থাকে। কিন্তু এই ক্রিকেট খেলা সম্পর্কে আমরা কতটুকুই বা জানি? এজন্য আজকের আর্টিকেলে ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত? পিচের বৈশিষ্ট্য এবং ক্রিকেটের সকল অজানা বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। ধৈর্য্য সহকারে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।

ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত

ক্রিকেট স্ট্যাম্প আমরা সবাই ই দেখি থাকি! কাঠের তৈরি তিনটি লাঠি। ক্রিকেট পিচের দুই প্রান্তে তিনটি করে এমন স্ট্যাম্প বা কাঠের স্তম্ভ দেওয়া থাকে। প্রতি ওভার শেষে খেলোয়াড়রা মুল স্ট্রাইক চেঞ্জ করে থাকে। সামনের দিকটা সবসময় স্ট্রাইক ধরা হয়। তবে আমরা কাঠের তৈরি স্ট্যাম্প দেখে থাকলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই স্তম্ভের একটি নির্দিষ্ট মাপকাঠি রয়েছে। সেই নির্দিষ্ট মাপ সম্পর্কে আমরা কতটুকুই বা জানি! চলুন নিম্নে ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে আসি;

  • স্ট্যাম্পের উচ্চতা: ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা ৭১.১ সেন্টিমিটার বা ২৮ ইঞ্চি।
  • স্ট্যাম্পের প্রস্থ: তিনটি স্ট্যাম্পের একেকটি স্ট্যাম্পের প্রস্থ ২২.৯ সেন্টিমিটার বা ৯ ইঞ্চি।

বলে রাখি; তিনটি স্ট্যাম্পের মাথায় আবার স্ট্যাম্প আকৃতির বেল্ট লাগানো থাকে। সেই বেলগুলোতে লাইট দেওয়া থাকে। বল স্ট্যাম্পে লাগার সাথে সাথে বেল্টগুলো পড়ে যায় বা বেল্টের লাইট জলতে থাকে।

ক্রিকেট পিচের বৈশিষ্ট্য

ক্রিকেট পিচ সম্পর্কে আমরা ক্রিকেট প্রেমীরা সবাই জানি, তারপরেও যারা জানেনা, শুধুমাত্র তাদের জন্য বলে রাখি; দুই ব্যাটসম্যান যে অংশে দাড়িয়ে বোলারকে প্রতিহত করতে থাকে সেই জায়গায়ই হলো পিচ। পিচের জন্য আলাদা জায়গা, গঠন এবং অন্যান্য আরো বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়। পিচ সম্পর্কে বা একটি আদর্শ পিচের বৈশিষ্ট্য নিম্নে তুলে ধরা হলো;

  • দৈর্ঘ্য: ক্রিকেট পিচের দৈর্ঘ্য ২০.১২ মিটার বা ২২ গজ।
  • প্রস্থ: ক্রিকেট পিচের প্রস্থ ৩ মিটার বা ১০ ফুট।
  • আকৃতি: আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেট পিচ গুলো সাধারণত তিন ধরনের দেখে থাকি। (১) গ্রাস পিচ, (২) উঁচু পিচ, (৩) মাঝারি পিচ।

গ্রাস পিচ

গ্রাস পিচটা বোলারদের জন্য একটু বেশি সাফল্য বয়ে আনে। গ্রাস পিচে বল কম বাউন্স খাই এজন্য এই বলগুলো খেলতে গিয়ে ব্যাটসম্যানদের প্রচুর হিমশিম খেতে হয়।

উঁচু পিচ

উঁচু পিচটা ব্যাটারদের জন্য ভালো। আবার অন্য দিক দেখলে উঁচু পিচ পেস বোলারদের জন্য একটু বেশি সাফল্য বয়ে আনে। উঁচু পিচে বল অনেক বেশি বাউন্স হয়, এজন্য পেস বোলাররা একটু বাড়তি বেনিফিট পায়।

মাঝারি পিচ

মাঝারি পিচটা বোলার এবং ব্যাটার উভয়ের জন্য ই সুবিধাজনক। যেখানে বল যে কোনো ধরনের হতে পারে। এজন্য কিছু সময়ে বোলার সুবিধা ভোগ করে, আবার কিছু সময়ে ব্যাটার।

ক্রিকেট খেলা সম্পর্কে কিছু অজানা বিষয়

ক্রিকেট খেলার প্রতি বর্তমানে ক্রিড়া প্রেমীদের আগ্রহের শেষ নেই! কিন্তু খেলার সমস্ত বিষয় সম্পর্কে অনেকেই এখনো অজ্ঞ। এই অধ্যায়ে ক্রিকেট ভক্তদের জন্য খেলা সম্পর্কে কিছু অজানা বিষয় তুলে ধরা হলো: ক্রিকেট খেলা নিয়ে অনেক কিছু জানার আছে আমাদের। কিন্তু সব বিষয়ে তো আলোচনা করা সম্ভব নয়! এখন আমরা জানবো ফুল লেন্থ বল সম্পর্কে। ফুল লেন্থ বল হলো এমন একটি বল যা ব্যাটসম্যানদেরকে সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেলে দেয়। ফুল লেন্থ বলটা সবসময় ব্যাটারের পায়ের কাছে পড়ে এবং সাথে সাথে একটু ঘুরে গিয়ে বলটা কিছুটা উপরে উঠে থাকে।

এই ক্রিকেট বিষয়ে আরেকটি বিষয় আমাদের জানা দরকার। সেটা হলো; ক্রিকেটের ড্রেস কোড। ক্রিকেট খেলাটা সকল দেশ ভিত্তিতে আলাদা পোষাক নির্ধারণ থাকে। নির্দিষ্ট জার্সি বা পোষাক পরেই খেলতে হয়। শুধুমাত্র টেস্ট ক্রিকেটের জন্য একদম সাদা পোষাক থাকে। আর টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য ইচ্ছে মতো পোষাক বা জার্সি পরে খেলতে পারে।

ক্রিকেট খেলার ধরন বা ফরম্যাট

ক্রিকেট খেলাটা মূলত আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে তিনটি ফরম্যাটে খেলা হয়ে থাকে। তবে মাঝে মধ্যে এই তিন ফরম্যাট বাদেও আরো কয়েকটি ফরম্যাটে খেলা হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক তিনটি ফরম্যাট হলো; টেস্ট ফরম্যাট, ওয়ানডে ফরম্যাট এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট

  • টেস্ট ক্রিকেট: ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি সময়ের খেলা হলো টেস্ট খেলা। ১১ জন খেলোয়াড় নিয়ে ৫ দিনের একেকটা ইনিংস খেলা হয়ে থাকে। টেস্ট সিরিজ সাধারণত ৫ টি ইনিংস এর হয়ে থাকে।
  • ওয়ানডে ক্রিকেট: ওয়ানডে ক্রিকেটটা সাধারণত ৫০ ওভারের খেলা হয়ে থাকে। ৫০ ওভারে খেলা হয়ে থাকলেও আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারের নিয়ম হলো; ৮ ঘন্টার মধ্যে ওয়ানডে খেলা শেষ করতে হয়।
  • টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট: ক্রিকেটের সবচেয়ে আনন্দদায়ক এবং মজার ফরম্যাট হলো টি-টোয়েন্টি। ২০ ওভারে খেলা হয়ে থাকে টি-টোয়েন্টি। এবং নির্ধারিত সময় থাকে ৩ ঘন্টা মতো।
ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত? পিচের বৈশিষ্ট্য এবং ক্রিকেটের সকল অজানা বিষয়
স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত? পিচের বৈশিষ্ট্য এবং ক্রিকেটের সকল অজানা বিষয়

ক্রিকেট অঙ্গনে বোলার এবং ব্যাটসম্যানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

বোলারদের দক্ষতার জন্য একটি দল বা দেশ জয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে যায়। বোলাররা সাধারণত যখন ফাস্ট বোলিং করে থাকে, তখন বলের গতি কম হলেও ১৩০+ থাকে। এই বলগুলো খেলতে বোলারকে একটু বেগ পোহাতে হয়। স্পিন বোলিং এটা ব্যাটসম্যানদের জন্য মাঝেমধ্যে খুব বিপদ ডেকে আনতে পারে। বলকে এক জায়গা ফেলে ঘুরিয়ে আবার ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করা হয় স্পিন বল দিয়ে। আরেকটা ভয়ংকর বল হলো; সুইং বল। এই ধরনের বলগুলো বাতাসের গতিপথ ধরে আঁকা বাঁকা হতে পারে। যা ব্যাটসম্যানদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে ওঠে।

আর ব্যাটসম্যানদেরকে নিয়ে বলতে গেলে ব্যাটসম্যানরা পিচের অবস্থা এবং বোলারের বলের ধরন দেখে নিজেকে পিচে বা ক্রিজে সেট করে থাকে। তবে ভালো খেলোয়াড়রা সাধারণত কিছু কিছু বিষয় সবসময়ই মাথায় রাখে। সেগুলো হলো; ফুটওয়ার্ক: ব্যাটসম্যানদের জন্য ফুটওয়ার্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফুটওয়ার্ক ঠিক না থাকলে বোলারকে প্রতিহত করতে অক্ষম হতে হয়। ব্যাটারদের আরো কিছু জনপ্রিয় শট হলো; কাভার শট, কাভার ড্রাইভ, পুল শট, স্ল্যাশ সট সহ আরো অনেক শট খেলে থাকে।

ক্রিকেট খেলার সূচনা কোথায় হয়?

শক্তিশালী ইংল্যান্ড থেকে ক্রিকেটের জন্ম বা উৎপত্তি শুরু হয়েছে। ১৬ শতকের দিকে ইংল্যান্ডে জন্ম হয় ক্রিকেট।

আরো পড়ুন: মেহেদী হাসান মিরাজ পরিসংখ্যান এবং বাংলাদেশের তরুণ অলরাউন্ডারের জীবনবৃত্তান্ত

তো এই ছিলো ক্রিকেট স্ট্যাম্পের উচ্চতা কত? পিচের বৈশিষ্ট্য এবং ক্রিকেটের সকল অজানা বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি আপনারা সঠিক তথ্য পেয়েছেন। এই আলোচনার বাহিরে আপনাদের আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের কে তা জানাতে পারেন।

আমাদের সাথে থাকুন- Sports Buzz BD

Leave a Comment